আল্লাহ বলেন, ‘তারা দিন-রাত তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, তারা শৈথিল্য করে না’ [সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ২০]
মুফতি আতাউর রহমান :::
আল্লাহর অবিরাম ইবাদত ও আনুগত্যে ক্লান্ত হয় না ফেরেশতারা। মানুষের মতো তাদের ক্লান্তি ও অবসাদ আচ্ছন্ন করতে পারে না। আর শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূর করতে তাদের ঘুমাতে হয় না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা অহংকার করলেও যারা তোমার প্রতিপালকের সান্নিধ্যে আছে তারা দিন-রাত তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং তারা ক্লান্তি বোধ করে না।
(সুরা হা-মিম-সাজদা, আয়াত : ৩৮)
আল্লামা ইবনে জারির তাবারি (রহ.) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘হে মুহাম্মদ, যখন আপনার চারপাশের কুরাইশের মুশরিকরা অহংকার করে এবং তাদের ও চন্দ্র-সূর্যের স্রষ্টা আল্লাহর সেজদা করতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন তারা জেনে রাখুক, আল্লাহর কাছে বিপুলসংখ্যক ফেরেশতা তারা অহংকার করে না, তারা নিজেদের বড় মনে করে না; তারা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং দিন-রাত নামাজ পড়ে। আর তারা ক্লান্তি বোধ করে না। ’ (তাফসিরে তাবারি : ২০/৪৩৭)
অবিরাম ইবাদত ও আনুগত্যের পরও তাদের ভেতর কোনো শৈথিল্য কাজ করে না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা দিন-রাত তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, তারা শৈথিল্য করে না। ’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ২০)
আল্লামা সামআনি (রহ.) বলেন, ফেরেশতারা সর্বক্ষণ আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং তারা দুর্বল হয় না, থেমে যায় না। (তাফসিরে সামআনি : ৩/৩৭৩)
আল্লামা সুয়ুতি (রহ.) বলেন, ‘আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ফেরেশতা কি ঘুমায়? আমি বলেছিলাম, আমি এই বিষয়ে কোরআন-সুন্নাহর কোনো বর্ণনা পাইনি। তবে কোরআনের একটি আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, তারা ঘুমায় না। তা হলো, ‘তারা দিন-রাত তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, তারা শৈথিল্য করে না। ’ (আল-হাবায়িক ফি আখবারিল মালায়িক, পৃষ্ঠা ২৬৪)
আল্লামা সাআদি বলেন, আল্লাহ ফেরেশতাদের গুণাবলিতে পূর্ণতা দান করেছেন। তিনি তাদের ইবাদতের সীমাহীন শক্তি ও আগ্রহ দিয়েছেন। তারা দিন-রাত আল্লাহর ইবাদত করে; কিন্তু ক্লান্ত হয় না। তারা তাঁর ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় না; বরং ইবাদতের সুযোগকে তারা তাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ জ্ঞান করে। ফেরেশতারা কখনো আল্লাহর অবাধ্য হয় না, আল্লাহ যা নির্দেশ দেন তারা তাই করে। (তাইসিরুল লাতিফ, পৃষ্ঠা ৩৫)